শাসকচক্রের খুঁটিতে বাঁধা চিহ্নিত গোষ্ঠীসমূহের আন্দোলনের প্রহসন রুখে দিতে ছাত্রসমাজ এক হও!
সংগ্রামী সাথী ও বন্ধুগণ,
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে তেজোদীপ্ত রক্তিম শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন পিসিপি’র গৌরবময় সংগ্রামের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেই সব শহীদদের, যাঁরা ছাত্র আন্দোলনে এবং জনগণের বাঁচার দাবি পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শহীদ হয়েছেন। গভীর আন্তরিকতার সাথে স্মরণ করছি সে-ই সব সহযোদ্ধাদের, শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, কারাগারে অন্তরীন রয়েছেন এবং যাঁরা শাসকের রক্তচক্ষু ও শত দমন-পীড়ন উপেক্ষা করে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সমর্থন সহযোগিতা যুগিয়ে যাচ্ছেন। আপোষহীন সংগ্রামের ৩৪তম বছরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সকল শাখার সহযোদ্ধা-সমর্থকদের জানাই বিপ্লবী অভিবাদন! জাতীয় মুক্তির সংগ্রামকে বেগবান করতে আগামী দিনে ইস্পাত কঠিন সংগ্রামে প্রস্তুত হওয়ার জন্য জানাই জোর আহ্বান।
প্রিয় সহযোদ্ধাগণ,
১৯৮৯ সালের ৪ঠা মে লংগদু গণহত্যার রক্ত বীজ থেকে জন্ম নেওয়া আমাদের প্রিয় সংগঠন বহু ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে ৩৪ বছরে পদার্পণ করছে। এমন সময়ে আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছি যখন পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশ এক ‘নিষ্ঠুর কারাগারে’ পরিণত হয়েছে। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার সভা-সমাবেশ ও বাক স্বাধীনতার মতো ন্যুনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেশে নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের গলাটিপে ধরেছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আগের মতো আবারও ক্ষমতার গদি রক্ষা করতে ফ্যাসিবাদী সরকার আন্তর্জাতিক পরিসরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। নিজ দেশের জনগণের প্রতি এ গণবিরোধী সরকারের আস্থা নেই, সে কারণে বাইরে প্রভুর সন্ধানে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থার কাছে গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হলেও দলীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগী নয়, এ যাবৎ জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রোগ্রাম দেয় নি, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে দমন-পীড়ন চলছে, সে ব্যাপারে বিরোধীদল হিসেবে বিএনপি নিরবতা পালন করছে। পাহাড়ি জনগণের ব্যাপারে ভ‚মিকা মোটেও আশা জাগানোর মতো নয়।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গত এক বছর ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিসর বিস্তৃত হয়েছে এবং থাইওয়ান-চীন, মায়ানমার, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধের দামামা বাজছে এবং রাজনৈতিক মেরুকরণ চলছে। আগামীতে বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশ্লেষকরা এমন পূর্বাভাস দিচ্ছেন। পাকিস্তানের ইমরান খান সে দেশের দূরবস্থার জন্য সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে দমন-পীড়নের জন্যও সেনাবাহিনীকে দায়ী করে প্রকাশ্যে বক্তব্য বিবৃতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট লুটেরা শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকেও পাকিস্তান বানাতে চায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে জারি রেখেছে নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন। এদেশেও একজন ইমরান খান দরকার যিনি সত্য প্রকাশে হবেন নির্ভীক। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে নানা দুর্নীতি ও লুটপাটের ভাগীদার কায়েমীস্বার্থবাদী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খোলার মতো সাহসী ব্যক্তি আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকলে, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটবে।
সংগ্রামী সাথী-বন্ধুগণ,
পার্বত্য চট্টগ্রামে গত পাঁচ দশক ধরে সেনাশাসন চলছে। বাংলাদেশ সরকার কার্যত (ডি ফেক্টো) পার্বত্য চট্টগ্রামকে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর ‘১১ দফা’ নির্দেশনা দিয়ে জারি করে সেনাশাসন বৈধতা দিয়েছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। গতবছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচলেত পার্বত্য চট্টগ্রামে সফর করতে চাইলে সরকার তাঁকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। গত ৭ এপ্রিল এবং ৮ মে ’২৩ বান্দরবানে ৮ম ও দশম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থীসহ ১১ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে সেনা মদদপুষ্ট ঠ্যাঙারে বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন এ ঘটনাকে ‘বম সম্প্রদায়ের ওপর টার্গেট ও পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছে। বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় সেনাবাহিনী কম্বিং অপারেশেনের নামে পরিকল্পিতভাবে পাহাড়ি উচ্ছেদ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী মিজোরামে ৫৭৬ জনের অধিক শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রত্যন্ত এলাকায় অভ্যন্তরীনভাবে উদ্বাস্তুর সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন, বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও ব্যবসায়িক মুুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে কতিপয় সেনা ও বেসামরিক কর্মকর্তা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে, এ চক্রটি পাহাড়িদের নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানের লামায় ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর জুমভূমি লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক জোরজবরদস্তিমূলক অধিগ্রহণের বিরদ্ধে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে। ঘটনাস্থলে সংসদীয় কমিটির সফর ও ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ একর করে ভূমি বন্দোবস্ত দেয়ার অন্যায্য প্রস্তাব আন্দোলনরত ম্রো ও ত্রিপুরারা প্রত্যাখান করেছে। তাদের বংশপরম্পরার পৈতৃক ভ‚মির ওপর মালিকানা নিশ্চিত না করে সংসদীয় কমিটি ভূমিদস্যু ও কর্পোরেট কোম্পানির পক্ষে সাফাই গেয়েছে। এতে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের প্রতি এ সরকারের নীতি প্রতিফলিত হয়েছে। পাহাড়ি জনগণের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে সরকার জুন ২০১৮ সাল হতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২টি পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১,০৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করার পরিকল্পনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, এর মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৩১৭ কি.মি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। চলমান সীমান্ত সড়ক নির্মাণের সময় ব্যাপক প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং পাহাড়ি ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের মতামত তোয়াক্কা না করে গণবিরোধী এই প্রকল্প সেনা বাণিজ্যিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইসিবি বাস্তবায়ন করছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার দিকে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, এ প্রকল্প থেকে আর্থিক লাভই তাদের নিকট মুখ্য। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুদিন আগে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ হলে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি দমন অভিযান সহজ হবে বলে গালগল্প করেছেন। অথচ বান্দরবান সদর, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে সেনা ক্যাম্পের পাশে সন্ত্রাসীদের আস্তানা, সেনা ও পুলিশের নাকের ডগায় চাঁদাবাজি মুক্তিপণ আদায় ও লক্ষীছড়িতে ধর্ষণ ঘটনায় সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সাজেক ও বান্দরবানে ব্যাপক পানি সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যত্রও একই অবস্থা। পর্যটন স্থাপনায় পানি সরবরাহ এবং ব্যাপকভাবে বন-পরিবেশ ধ্বংস ও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে ঝিরি ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়ায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এতে ম্রো ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী নিজ বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেনা চলাচলের সুবিধার্থে পাহাড় কেটে রাস্তাঘাট নির্মাণ, ক্যাম্প স্থাপন, সেটলার বসতি সম্প্রসারণ, পাহাড় কাটা, অবৈধভাবে কাঠ পাচার এসব কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিধস হচ্ছে, যা পরে মারাত্মক আকার ধারণ করবে।
প্রতিবাদী বন্ধুগণ,
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করলেও “সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক” শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়নি। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে দিন দিন সংকুচিত করা হয়েছে। বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে শিক্ষাকে একটি বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। শিক্ষার ব্যয়ভার অধিকাংশ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এ কারণের একজন শিক্ষার্থী কোন মানে শিক্ষা গ্রহণ করবে, সেটি নির্ভর করছে তার পরিবারের আর্থিক সামর্থ্যের ওপর। এতে ধনীক শ্রেণী লাভবান হলেও সাধারণ মানুষের সন্তানরা শিক্ষার নাগাল পাবে না। সাম্প্রতিককালে বৈশ্বিক পরিস্থিতি দোহাই দিয়ে নিত্য পণ্য দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষার উপকরণের দামও বৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন সরকার শিক্ষার্থীদের উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক চেতনায় দীক্ষিত করতে সু-পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালে ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা হতে জারিকৃত সার্কুলার ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শপথবাক্য পাঠ সংক্রান্ত’ এবং পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর মত বিষয়গুলো তা সুস্পষ্ট ও প্রমাণিত। অন্যদিকে দেশের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সাদ্রি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হলেও দেশের আরও ৪৫টির অধিক সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ভাষা এখনও উপযুক্ত মর্যাদা পায় নি। যে পাঁচটি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হয়েছে, তাতেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ও যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। আওয়ামী লীগ কথার কথায় নিজেদের “সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার” হিসেবে জাহির করলেও বাস্তবে তাদের চরিত্র ভিন্ন। ২০১১ সালের ৩০শে জুন পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীতে দেশের ৪৫ অধিক ভিন্ন জাতিসত্তাসমূহের “বাঙালি” জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে। দেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ছাত্র ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিগণ তা বাতিলের দাবি জানালেও ফ্যাসিস্ট সরকার তা করেনি। সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়সমূহের হল দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজী, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নির্যাতন করে এক ভয়-ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের মুক্তচিন্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ব্যবস্থা আরো চরম সংকটের মুখমুখি। একেত দুর্গম এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে। তদুপরি অধিকাংশ স্কুল-কলেজ সমূহে বিরাজ করছে চরম শিক্ষক সংকট। রয়েছে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ স্কুল ভবন, স্কুলের গেইট ভেঙে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর (খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ অফিসের সন্নিকটে) ঘটনাও ঘটেছে। স্কুুল-কলেজে ছাত্রাবাস, কলেজ বাস চালু নেই। মানসম্মত শিক্ষা দূরের কথা, ন্যুনতম শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে পাহাড়ি শিশুরা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়ার হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব সংকট নিরসনে জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ ও ক্ষমতাসীন দলীয় ‘সাংসদ’ তথাকথিত জনপ্রতিনিধিদের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়, তৎপরতাও নেই। তাদের যত দুঃশ্চিন্তা ও তৎপরতা হচ্ছে পাহাড়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে। সে কারণে রাঙ্গামাটিতে এপিবিএন (আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন) সদর দপ্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে (২৬ মে ২০২২) আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান, সাংসদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একযোগে অংশ নিয়ে এক সুরে কথা বলেছেন। সেনা ক্যাম্প সম্প্রসারণ, এপিবিএন ও র্যাব মোতায়েনে তারা সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা দিয়ে চলেছে। আরও ন্যাক্কারজনক বিষয় হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে প্রাইমারি লেভেলে অযোগ্য অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দানের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা পরিষদ শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
সরকার শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যাতে কোন ধরনের আন্দোলন প্রতিবাদ করতে না পারে, সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠোর সেনা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতিপয় শিক্ষক এ ধরনের ঘৃণ্য কাজে যুক্ত রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে।
সংগ্রামী বন্ধুগণ,
সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সরকার দলীয় নেতাদের সাথে সন্তু লারমার প্রমোদ বিহার ও গ্র্যান্ড হোটেলে ৯ মার্চ ২০২৩ চুক্তি বাস্তবায়নের বৈঠক জনমনে নানা সন্দেহ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছরে এমন রহস্যজনক বৈঠক ও ‘পাহাড়ের পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো’ সন্তু লারমা’র এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। গেল ২ ডিসেম্বর চুক্তির বর্ষপূর্তিতে ঢাকায় আহুত এক সভায় শেখ হাসিনার সরকার ‘পার্বত্য চুক্তি’ বাস্তবায়ন করছে না বলে সন্তু লারমা অনেক অভিযোগ করেছেন। অথচ তিন মাস পেরুতে না পেরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামে কী এমন অগ্রগতি হলো, যাতে কিনা সন্তু লারমা “অগ্রগতি” দেখতে পাচ্ছেন?!? নিজের স্বার্থ ও গদি রক্ষার্থে চোখের পলকে সন্তু লারমা বোলচাল পাল্টাতে ও ডিগবাজি খেতে দ্বিধা করেন না, বারে বারে তারই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সুন্দরবন হোটেল-আগারগাঁও অডিটোরিয়াম-রাঙ্গামাটি স্টেডিয়ামে আর্মি কনসার্ট, এপিবিএন সদর দপ্তর উদ্বোধন ও কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেলে। সরকারের মনোরঞ্জন ও ডিগবাজিতে পারঙ্গমতার কারণে গত ২৪ বছর ধরে সন্তু লারমা কার্য-ক্ষমতাহীন আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারে বসে আছেন এবং সরকারের নীল নক্সা বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছেন। পাহাড়ি জনগণের অধিকার আদায়ের কথা বললেও দাবি বাস্তবায়ন না হতেই সন্তু লারমা গুটিয়ে ফেলেন আন্দোলন, গোপন সমঝোতায় (‘অলিখিত চুক্তি’) উপনীত হন সরকারের সাথে, নিজ হাতে অস্ত্র তুলে দেন, চুক্তির শর্ত পূরণ হবার আগে শেখ হাসিনাকে হুয়াবেনি ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার (২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯) পাইয়ে দিতে প্যারিসে দৌঁড় দেন, ‘পার্বত্য চুক্তির’ দলিলে পাহাড়ি জনগণের ঘোরতর আপত্তি ‘উপজাতি’ শব্দ ব্যবহার মেনে নেন, শাসকগোষ্ঠীর নিকট সব কিছু বিকিয়ে দিয়ে এখন তার ভ‚মিকা ‘ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার’-এর মতো। সময় বিশেষে লোকদেখানো হম্বিতম্বি করলেও সরকারের বিপক্ষে যাবার অবস্থা তার নেই, আঞ্চলিক পরিষদের গদি রক্ষার্থে সন্তু লারমাকে সরকারের লেজুড় হয়ে টিকে থাকতে হবে। সে ভ‚মিকা তিনি নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছেন!
‘পার্বত্য চুক্তির’ পর জনসংহতি সমিতি ও শান্তিবাহিনীর পর্ব শেষ! আঞ্চলিক পরিষদে অধিষ্ঠিত সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন বর্তমান জেএসএস হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর বি-টিম। এটি আর জনগণের পক্ষের শক্তি নয়, অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রামও তারা করছে না। মুখে চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বললেও সেটা তাদের লক্ষ্য নয়, সে ব্যাপারে তাদের কোন কর্মসূচিও নেই। জনগণ সংগঠিত হয়ে পাহাড়ে আর যাতে অধিকার আদায়ের আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে, সে লক্ষ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নীলনক্সা মোতাবেক বিভিন্ন গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। সে প্রক্রিয়ায় শরীক হয়েছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস। জনগণের পক্ষ থেকে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত পরিহারের জোর আহ্বান সত্ত্বেও সন্তু লারমার জেএসএস-এর সশস্ত্রগোষ্ঠী সংঘাত বাঁধাতে মাঠে নেমেছে। তার পরিণতিতে দিঘীনালা, পানছড়ি, নান্যাচর, লংগুদু, ঘাগড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তা হামলা, খুন ও সংঘাত আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার পাশাপাশি বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ওপর আঘাত হানতে সেনাবাহিনী নব্য মুখোশবাহিনীকে ব্যবহার করছে।
প্রিয় সাথী-বন্ধুগণ,
আমরা গভীর বেদনার সাথে লক্ষ্য করছি, ছাত্রসমাজকে বিভক্ত ও দিকভ্রান্ত করতে পিসিপি’র গৌরবোজ্জ্বল নাম ভাঙিয়ে সমাজের বখাটে ও সমাজবিরোধী শক্তিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করে পাহাড়ি জনগণের আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করাই হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য। এর নাটের গুরুদের পরিচয় ও ঠিকানা কারোর অজানা নয়। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আন্দোলনের স্রোতে এরা খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে। মনে রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যা, দমন-পীড়নের প্রতিবাদে সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর উত্থান ঘটেছে। প্রতিষ্ঠা লগ্নের সে-ই চেতনা ধারণ করে আমরা পূর্ণস্বায়ত্তশাসনর দাবি উর্ধ্বে তুলে ধরে সক্রিয় রয়েছি। পাহাড়ে সমস্ত রকমের হত্যাকান্ড ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং আপোষহীন প্রতিবাদ সংগ্রাম সংগঠিত করছি। সাম্প্রতিক সময়ে বান্দরবানে পর পর দু’টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় পিসিপি ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে, চট্টগ্রাম ও অন্যত্রও প্রতিবাদ অনুুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ এপ্রিল ২০২৩ প্রতীকী লোগাঙ লঙমার্চ সংগঠিত করার মাধ্যমে আমরা নব্বইয়ের পিসিপি’র উত্তরসূরী হিসেবে ভূমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর।
পিসিপি’র নাম ভাঙিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ক’টি গোষ্ঠী তৎপরতা দেখায়, বম জাতিসত্তার ওপর হত্যাকান্ড ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা দমন-পীড়নে তাদের নিরবতা পালনের মাধ্যমে তারা নিজেদের চেহারা উন্মোচন করে ফেলেছে। অতীতে সামরিক শাসনের আমলেও ছাত্র নামধারী বখাটেরা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল। বর্তমান সময়েও তার পুনরাবৃত্তি চলছে, তা বুঝতে কারোর বাকি নেই। আমরা ভুলে যাই নি, গঠনের অল্পকাল পরে পিসিপি আপোষকামী সুবিধাবাদীদের কবলে পতিত হয়েছিল। পরবর্তীতে পিসিপি’র নেতৃত্ব সংগ্রামী ধারায় ফিরে আসায় নব্বইয়ের দশকের গোড়াতে ছাত্র-গণজাগরণ হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র পিসিপি সংগঠন ছড়িয়ে পড়ে। সংগঠিত হয় ঐতিহাসিক লোগাঙ লঙমার্চ, অন্যায় ১৪৪ ধারা লংঘনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রাম তুঙ্গে ওঠে। সরকারের লেজুড়, দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল ও ছাত্রবেশী দুর্বৃত্তরা কোণঠাসা ও পরাস্ত হয়। সরকার পিছু হটে দমন-পীড়ন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের হৃতগৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আমরা নিবেদিতপ্রাণ। কোন বাধা-বিপত্তি, হুমকিতে আমরা দমে যাবো না! কোন চক্রান্ত ও অপপ্রচার আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারবে না, গৃহীত সিদ্ধান্ত থেকে আমরা কখনই বিচ্যুত হবো না!
পিসিপি’র ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উদাত্তভাবে আহ্বান আসুন, শাসকচক্রের খুঁটিতে বাঁধা চিহ্নিত গোষ্ঠীসমূহের আন্দোলনের প্রহসন রুখে দিতে ছাত্র সমাজ এক হই, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলি।
আমাদের দাবি :
১. পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনই পার্বত্য চট্টগ্রামের একমাত্র সমাধান।
২. অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে। বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে অন্যত্র সম্মানজনকভাবে পুনবার্সন করতে হবে।
৩. ভারত প্রত্যাগত পাহাড়ি শরণার্থীদের পুনর্বাসন ও স্ব-স্ব জায়গা জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে।
৫. কেবল ৫টি ভাষায় নয় সকল জাতিসত্তার প্রাক প্রাথমিক মাতৃভাষা চালুসহ পিসিপি’র শিক্ষা সংক্রান্ত পাঁচ দফা দাবিনামা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. এযাবত কালে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত সকল হত্যাযজ্ঞের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। দোষী ব্যক্তিদের আইানুগ শাস্তি দিতে হবে।
৭. আটককৃত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদসহ ইউপিডিএফভুক্ত সকল গণসংগঠনের নেতা-কর্মী শুভাকাক্সক্ষী, সমর্থকদের মুক্তি প্রদান এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা তুলে নিতে হবে।
৮. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হবে।
৯. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক অবৈধ ১১দফা নির্দেশনা বাতিল করতে হবে।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজসমূহের ছাত্রাবাস চালু করতে হবে।
১১. সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
১২. শিক্ষা উপকরণের দামসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে।
১৩. পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণ চলবে না।
আমাদের সাথে আওয়াজ তুলুন:
১. বান্দরবান রোয়াংছড়িতে গত ৭ এপ্রিল ও ৮ মে ’২৩ পর পর দু’টি ঘটনায় ১১ জন বমকে হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. পার্বত্য চট্টগ্রামে নব্যমুখোশ বাহিনীসহ সরকার-সেনা মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া বন্ধ করতে হবে।
৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ ও বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪সহ সকল নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করতে হবে।
৪. তথাকথিত মাউন্টেইন পুলিশ গুটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এপিবিএন, র্যাব-এর কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৫. মাইকেল চাকমা, কল্পনা চাকমাসহ এ যাবৎ যারা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কর্তৃক অপহরণ ও গুমের শিকার হয়েছেন, অবিলম্বে তাদের উদ্ধারপূর্বক সুস্থ শরীরে ও নিরাপদে স্ব স্ব পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে।
৬. রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানসহ রাষ্ট্রীয় মদদে সকল ধরনের খুন-গুম-অপহরণ ও ধরপাকড় বন্ধ করতে হবে।
৭. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর বিধি নিষেধ তুলে নিয়ে মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. সংবাদপত্র ও মিডিয়ার ওপর বিধি-নিষেধ তুলে নিতে হবে।
৯. সাজেক অঞ্চল উপজেলা বানিয়ে পাহাড়িদের সংখ্যালঘু করার ষড়যন্ত্র ও লামা-মাইসছড়িতে ভ‚মি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।
১০. সীমান্ত সড়ক নির্মাণ বন্ধ করে প্রকৃতি-পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত, ২০ মে ২০২৩।

